করোনার কারণে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা বিষয়ে গাইডলাইন প্রকাশ করেছ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। এছাড়া আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
গাইডলাইনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পরিকল্পনাসহ এ বিষয়ে বাজেট তৈরিতে নিজস্ব তহবিল ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ পাওয়া মাত্র শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে প্রস্তুত থাকতে হবে।
গাইডলাইনে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ক্লাসরুমের বেঞ্চগুলোকে তিন ফুট দূরত্বে স্থাপন করতে বলা হয়েছে। গাইডলাইন অনুসারে পাঁচ ফুটের কম দৈর্ঘ্যের বেঞ্চে একজন এবং পাঁচ থেকে সাত ফুট দৈর্ঘ্যের বেঞ্চে দুইজন শিক্ষার্থী ক্লাস করতে পারবে। স্কুলে ঢোকার আগেই থার্মোমিটার ব্যবহার করে তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া পাঁচ ফুটের কম দৈর্ঘ্যের বেঞ্চে একজন এবং পাঁচ থেকে সাত ফুট দৈর্ঘ্যের বেঞ্চে দুইজন শিক্ষার্থী ক্লাস করতে পারবে। প্রতিটি বেঞ্চে দুইজন করে ছয়টি বেঞ্চে ১২ জন শিক্ষার্থী বসতে পারবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতেই এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
মাউশির গাইডলাইনে বলা হয়েছে, চারটি ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথমত, নিরাপদ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য পরিকল্পনা করা, দ্বিতীয়ত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রস্তুত করা, তৃতীয়ত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিরাপদে চালু করা, চতুর্থত, শিক্ষা কার্যক্রম চলাকালে করোনার বিস্তার রোধে পদক্ষেপ নেয়া।
সংক্রমণের বিস্তার রোধে ব্যবস্থার ব্যাপারে গাইডলাইনে বলা হয়, করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে প্রতিদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশের সময় সবার স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে- বাধ্যতামূলক মাস্ক পরা, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলাফেরার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থারও পরিকল্পনা করা।
নিরাপদ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার ব্যাপারে মাউশির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে কতজনকে নিয়ে একই শিফটে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো সম্ভব হবে তার পরিকল্পনা করতে হবে। তিন ফুট দূরত্ব নিশ্চিত করে শিক্ষার্থীদের বসাতে হবে। শিক্ষার্থীর চাহিদা ও অভিভাবকের মতামতের ভিত্তিতে এবং প্রতিষ্ঠানের ধারণক্ষমতা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি করতে হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল বৈঠকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে আলোচনা হয়। ওই আলোচনা অনুযায়ী দুই-এক দিনের মধ্যে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গাইডলাইন পাঠানোর কথা ছিল।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। পরবর্তী সময়ে এই ছুটি কয়েক দফায় বাড়ানো হয়। এছাড়া, করোনার কারণে স্কুল-কলেজে পাবলিক পরীক্ষায়ও সরকার কিছু পরিবর্তন আনে। তবে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা বলা হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে।
ব্রেকিংনিউজ/এসআই