নিউজিল্যান্ডের সংসদে গর্ভপাতকে অপরাধ হিসেবে না দেখে স্বাস্থ্যগত বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করার বিল পাস হয়েছে৷ স্পষ্টতই এটি প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্নের বিজয়৷ ২০১৭ সাল থেকে তিনি এ নিয়ে কাজ করছিলেন৷
বুধবার নিউজিল্যান্ডের সংসদ ১৯৭৭ সালের পুরনো গর্ভপাত আইনকে বদলে দেবার পক্ষে রায় দিল৷ সংসদের ৬৮ জন সদস্য এই বদলের পক্ষে রায় দিলেন৷ বিপক্ষে দিলেন ৫১ জন৷ এখন গভর্নর জেনারেল স্বাক্ষর করলেই এটি আইনে পরিণত হবে৷
‘‘৪০ বছরের বেশি সময় ধরে নিউজিল্যান্ডে গর্ভপাতই একমাত্র স্বাস্থ্যগত বিষয় যা অপরাধ বলে বিবেচিত হচ্ছিল,'' বিচার মন্ত্রী অ্যান্ড্রু লিটল এক বিবৃতিতে জানান৷ ‘‘কিন্তু আজ থেকে এটি সঠিকভাবে শুধু স্বাস্থ্যগত বিষয় বলেই বিবেচিত হবে৷''
১৯৭৭ সালের আইন অনুযায়ী, গর্ভপাত একটি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হত৷ শুধু দু'জন ডাক্তার যদি এই সনদ দিতেন যে গর্ভধারণ নারীর মানসিক বা শারীরিক ঝুঁকির কারণ হতে পারে, তবেই তা করা যেত৷
অবৈধভাবে কেউ গর্ভপাত করলে তার সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ডের বিধান ছিল৷ ‘আজ এক পরিবর্তন এল'। ‘‘আগের আইনটিতে নারীদের গর্ভপাতের জন্য অনেক কঠিন পথ পাড়ি দিতে হত,'' লিটল ব্যাখ্যা করেন৷
‘‘এতে করে পুরো প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত হত এবং সেটা নিরাপদ ছিল না৷'' ‘‘আজ চূড়ান্তভাবে পরিবর্তন এল,'' লিটল বলেন৷ ‘‘নিরাপদ গর্ভপাত আজ নিউজিল্যান্ডে বৈধ৷''
দেশটির পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের প্রধান নির্বাহী জ্যাকি এডমন্ড এই ভোট ও এই সত্যকে স্বাগত জানান যে নারীরা অবশেষে তাদের স্বাস্থ্যগত সব সিদ্ধান্ত নিজেরাই নিতে পারবেন৷
‘‘এটা চমৎকার যে, সংসদ আজকে এমন এক সিদ্ধান্ত নিল, যা তাদের ৪০ বছর আগেই নেয়া উচিত ছিল,'' বলেন তিনি৷
এদিকে, রক্ষণশীল সংসদ সদস্য সিমিওন ব্রাউন, যিনি এই বিলের বিপক্ষে ছিলেন, বলেন যে জন্মের অপেক্ষায় থাকা একটি শিশুকে একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবেই বিবেচনা করতে হবে, তাকে সম্মান দেখাতে হবে৷
এই বিল পাস প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্ন ও তার মধ্যবামপন্থি জোটের জন্য একটি বিজয়৷ এই সংস্কার ২০১৭ সালে তার নির্বাচনী এজেন্ডা ছিল৷
নিউজিল্যান্ডের আগে সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার উচ্চ আদালত গর্ভপাতের বৈধতার পক্ষে রায় দেন৷ আর আয়ারল্যান্ড এক রেফারেন্ডামের মাধ্যমে এর সংস্কার করে৷
ব্রেকিংনিউজ/অমৃ