নাজনীন নাহার কেয়া। ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী তিনি। কাজ করেছেন অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ নাটকে। ছোটপর্দায় একসময় বিভিন্ন নাটক ও টিভি সিরিয়ালে নিয়মিত দেখা গেলেও বর্তমানে অভিনয় পেশা থেকে দূরেই সরে এসেছেন তিনি। তবে কাজ করছেন বিভিন্ন মানবসেবামূলক কর্মকাণ্ডে। সারা বিশ্বের ন্যায় যখন বাংলাদেশও উদ্ভুত মহামারী করোনা ভাইরাসে আতঙ্কিত, সেই মুহূর্তে জীবনের মায়াকে তুচ্ছ করে মানবসেবাকেই ব্রত হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি। আর হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশে মানবতার এক উজ্জ্বল সারথি ও মানবিক মনোভাবাপন্ন ব্যক্তিত্বের এক আদর্শিক উদাহারণ। ভালোবেসে মানুষ তাকে ‘বুবু’ বলেও ডাকে। ‘বুবু' নামেও তিনি সমান পরিচিত।
তিনি মূলত ব্লাড ক্যাম্পেইন নিয়ে কাজ করেছেন। যারা ব্লাডের গ্রুপ জানে না তাদেরকে নিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ক্যাম্পেইনের আয়োজন করে থাকেন তিনি। এছাড়াও, যারা ব্লাড ডোনার বা ব্লাড ডোনেট করতে চায় তাদেরকে তিনি ব্লাড ডনেট করে থাকেন। মূলত, ব্লাড ডোনেশন, ব্লাড ক্যাম্পেইন, বিভিন্ন বৃদ্ধাশ্রম, পথশিশু, বিভিন্ন এনজিও'র অবহেলিত শিশুদের নিয়ে কাজ করে থাকেন তিনি।
এছাড়াও, তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্রেকিংনিউজকে জানান, বন্যার্তদের জন্যও তিনি এর আগে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। ২ বছর আগে কুড়িগ্রামে দুঃস্থ বন্যার্তদের সহযোগিতায় তিনি প্রায় ১১৫টি পরিবারের সাথে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেছিলেন। তাদের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করে তিনি তার যথাসাধ্য সামার্থ্য অনুযায়ী এই ছিন্নমূল মানুষগুলোর পাশে এসে দাঁড়াতে সমর্থ হয়েছিলেন। তিনি ভয়াবহ করোনা সংকটের মধ্যে লকডাউনে ৫০ জন অসচ্ছল রিকশাওলার পরিবারের মধ্যে এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মধ্যবিত্ত পরিবারের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন। তাদেরকে চাউল, সেমাই, সুজি, সাবান প্রভৃতি সামগ্রী দিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে গেছেন নাজনীন নাহার কেয়া।
এমনকি এই ইদুল আজহায় চাঁদপুরে তার নানাবাড়িতে ঈদ বাজার উপলক্ষে বিভিন্ন অসহায় ব্যক্তিদের মাঝে এক হাজার করে টাকা দিয়ে ঈদের দিনে সমাজের অবহেলিত, খেটে খাওয়া ওই মানুষগুলোর মুখেও হাসি ফুটিয়েছিলেন। রোজার সময়ও তিনি নিয়মিত ইফতারিসহ বিভিন্ন পরিবারের মধ্যে ত্রাণ সরবরাহ করেছিলেন ।
সর্বোপরি, নিজের সাধ্যমতো মানুষের পাশে এসে মানবতার উদাত্ত জয়গান গেয়েছেন নাজনীন নাহার কেয়া। মানুষ যে মানুষের জন্য, সেই চিরন্তন বাণীকেই যেন মন ও মননে ধারণ ও বহন করে নাজীন নাহার কেয়ার আদর্শ হতে পারে সমাজের যেকোনো বিত্তবানদের জন্য অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়।
সত্যিই এই অস্থিতিশীল স্বার্থমগ্ন শহরে একজন নাজনীন নাহার কেয়ার আজ বড়োই অভব। প্রতিটা নগরে, বন্দরে, শহরে যদি এমন একজন নাজনীন নাহার কেয়া থাকতো, তবে হয়তো মানবতা এখনও শৃঙ্খল ভেঙে মুক্ত বিহঙ্গের মতো হাসতে পারতো, সমাজের আর অন্য দশজনের মতো নিম্নস্তরের ঘৃণিত মানুষগুলোও আশার প্রদীপ জ্বেলে জীবনের জন্য হলেও বাঁচার সংস্থান খুঁজে পেতো। আলোয় আলোয় মুখরিত হতো পৃথিবী আর মানুষ হতো সেই নির্মল বিশুদ্ধ পৃথিবীর আলোকবর্তিকা সম।
ব্রেকিংনিউজ/এমএইচ