আপনি যদি রম্য ঘরানার গল্প পছন্দ করে থাকেন তাহলে অবশ্যই শিবরাম চক্রবর্তীর নামটা শুনেছেন না হলে কোথাও পড়েছেন। বিখ্যাত সেই রম্যলেখক শিবরাম চক্রবর্তীর আজ ১১৭ তম জন্মদিন। যিনি ব্যক্তিগত জীবনে সাদাসিধে মানুষ থাকলেও রম্য রসে ছিলেন অনন্য সাধারণ এক কারিগর।
ভদ্রলোক ৭৭ বছর বেঁচেছিলেন। আর বয়সের মধ্যে বেশির ভাগ সময়ই কেটেছে তার ভাগ্যান্বেষণে। কোলকাতাতে হকারি করেছেন, কম বেতনের কেরানীর চাকরী করেছেন, আর শেষে করেছেন লেখালেখি। এমনও দিন গেছে যে বিকালের নাস্তার টাকাটাও তাকে জোগাড় করতে হয়েছে একটা গল্প লিখে!
বাংলা সাহিত্যের রস ভান্ডারে রম্য গুরু শিবরাম চক্রবর্তীর জন্ম ১৯০৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর কোলকাতায় মাতুলালয়ে। তিনি ১৯৮০ সালের ২৮ আগস্ট কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। কবিতা-রচনা দিয়ে তার সাহিত্য-জীবনের শুরু। প্রথম কবিতা বেরোয় 'ভারতী' পত্রিকায়। প্রথম প্রকাশিত বই দুটিও-'মানুস' ও 'চুম্বন'-কবিতার। তারপর অজস্র লেখা লিখেছেন। প্রবন্ধ, নাটক এবং অদ্বিতীয় অজস্র হাসির গল্প। রাজনীতি করেছেন, জেল খেটেছেন, রাস্তায় কাগজ ফেরি করেছেন, ফুটপাথে রাত্রিযাপন করেছেন, সাংবাদিকতা করেছেন। তবে বিয়েটা করে ওঠেন নি হাসির রাজা খ্যাত এই সাহিত্যিক!
হাস্যরসের আড়ালেও তাঁর জীবন ছিলো এক আবেগী ভালবাসায় মাখানো। যখন ধর্ম নিয়ে বাঁজখাই আচরণ, ধর্মকে পুঁজি করে ব্যবসা। তখন অনেকটা উল্টো পথে হেঁটেছিলেন এই রস সাহিত্যিক। তার কাছে মন্দির, মসজিদ, গির্জা না বানিয়ে পরিবেশের জন্য উপযোগী টয়লেট বানানোর কথাই পেত বেশি প্রাধান্য। শিবরামের ব্যাংকে কখনই খাতা ছিল না। হিসাব লিখতেন দেওয়ালে। চুন-সুড়কির উপর রংয়ের প্রলেপে।
মৃত্যুর ৫ মিনিট আগে ‘ফার্স্টক্লাস’ আছি বলে চলে যাওয়া শিবরাম সেবার তার চলে যাওয়াটা শুধু মাত্র শরিরের প্রস্থান ছিলো। এখনও কোন কিশোর বা কিশোরী লেপের তলে বা বেলকুনিতে বসে পড়তে পড়তে পেটে খিল ধরার যোগাড় হলে, সেখানে থাকে এই হাসির রাজা, শিবরাম চক্রবর্তী।
আজ ১৩ই ডিসেম্বর এই মহান লেখকের ১১৭-তম জন্মদিন! শুভ জন্মদিন শিবরাম চক্রবর্তী।
ব্রেকিংনিউজ/নিহে