অন্যান্য যে কোন বছরের তুলনায় এবার ঠাকুরগাঁওয়ে ব্যাপক আলুর চাষ হয়েছে। বাজার মূল্য অনুকূল থাকায় চাষিরা ঝুকেছেন আলু চাষে। তবে দাম নিয়ে শঙ্কায় কৃষকরা।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত বছর ২৫ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। কিন্তু এবার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৫ হাজার ৫৯১ হেক্টরে। তবে কৃষক যে হারে আলুর চাষ করেছে তাতে আলু আবাদ ৩০ হাজার হেক্টর ছাড়িয়ে যেতে পারে। অতীতে জেলায় ৬-৭ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আলু আবাদ হয়নি। আর এই আলু ক্ষেতের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন চাষিরা। গত বছর যে জমি ৬ হাজার টাকায় কন্ট্রাক নেয়া যেতো, সে জমি এবার ১৪ হাজার টাকা দিয়েও মিলছে না।
আকচা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা দত্তেস্বর রায় জানান গত বছর আলুর আবাদ করেছিলাম তিন বিঘা ৫ কাঠা। ৩ গুন লাভ পাওয়ায় এবার আলু লাগিয়েছি ৪ বিঘা ১০ কাঠা জমিতে। আলু চাষের জন্য আবহাওয়াও ভালো। কৃষি ভর্তূকী ও স্বল্প সুদে ঋণ পেলে লাভবান হবে কৃষক। একই কথা জানান পীরগঞ্জ জাবরহাট এলাকার রমজান আলীসহ অনেকে।
কৃষি শ্রমিক আব্দুল হাকিম বলেন আলু দাম বেশি থাকায় কৃষক জমি কন্ট্রাক না দিয়ে নিজেই আলুর আবাদ করছে। যে জমি গত বছর বিঘা প্রতি ৬-৭ হাজার টাকায় কন্ট্রাক পাওয়া যেত কিন্তু সে জমি এবার ১৩-১৪ হাজার টাকা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না।
রুহিয়া থানার ঢোলারহাট এলাকার কন্ট্রাক গ্রোয়ার্স মীর জাহিদ বলেন গত বছর দেড়শ বিঘা জমিতে আলুর আবাব করেছিলাম। ফলনও ভালো হয়েছিল এবং দামও পেয়েছি ভালো। কিন্তু এবার বীজের দাম বেশি, প্রচুর মানুষ আলুর আবাদ করেছে। বাজার ব্যবস্থা ঠিক রাখতে না পারলে কৃষক আলুর দাম ঠিকমত পাবে না, লজে পড়বে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আফতাব হোসেন জানান, ঠাকুরগাঁও জেলায় এবার ২৭-২৮ হাজার হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। বিগত বছরে লক্ষমাত্রা ছিল ২৪ হাজার ৫’শ হেক্টর। ৩ থেকে সাড়ে ৩ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। আলুর ভালো জাত এবং উৎপাদন পদ্ধতি কৃষকদের হাতে কলমে শিখিয়ে দিচ্ছি। বাজার মূল্য অনুকূল থাকায় কৃষকরা আলু চাষে উৎসাহিত হয়েছে। উৎপাদিত আলু এলাকার চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি ।
ব্রেকিংনিউজ/এসপি